মঠবাড়িয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় কলাগাছ ও মাটির শহীদ মিনারে শিশুদের একুশ পালন
রফিক্জ্জুামান আবীর :
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ২০৫টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আজও গড়ে ওঠেনি ভাষার শহীদ মিনার। সরকার প্রতিটি বিদ্যালয়ে আন্তুর্জাতিক মহান মাতৃভাষা দিবস পালন বাধ্যতামূলক করলে বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় শিক্ষার্থী একুশের প্রভাত ফেরী শেষে শহীদ মিনারে ফুল দিতে পারেনা। তবে কিছু কিছু বিদ্যালয়ে শিশুরা কলাগাছ আর মাটি দিয়ে শহীদ মিনার বানিয়ে শহীদদের প্রতি পুষ্পমাল্য অর্পণ করে আসছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানাগেছে, উপজেলায় ২০৫ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দৃষ্টনন্দন কোনও শহীদ মিনার নেই। তবে এর মধ্যে ২০ টির মত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিজস্ব উদ্যোগে শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়েছে যা খর্বকায় ও জীর্ণদশা। বাকিসব বিদ্যালয়ে কলাগাছ ও মাটি দিয়ে বিকল্প শহীদ মিনার বানিয়ে তাতেই ফুল দেয় শিশু শিক্ষর্থীরা।
গতকাল বুধবার সরেজমিনে জানাগেছে, ৫৬ নম্বর মঠবাড়িয়া মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়েই কোনও শহীদ মিনার নেই। স্কুলটি একটি মডেল স্কুলে শহীদ মিনার না থাকায় প্রতিবছর শিশু শিক্ষার্থীরা প্রভাত ফেরী শেষে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে আসছে।
গতকাল বুধবার দিনভর মঠবাড়িয়া পৌরসভার ৯২ নম্বর উদয়ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনও শহীদ মিনার না থাকায় কয়েকজন শিশু শিক্ষার্থী মিলে কলাগাছ,কাদা মাটি আর রঙিন কাগজ দিয়ে শহীদ মিনার বানিয়ে একুশ পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। মহান মাতৃভাষা দিবসে বিকল্প এ শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের ওরা শ্রদ্ধা জানাবে।
বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র রুবেল বলে, আমাদের স্কুলে কোনও শহীদ মিনার নাই। তাই প্রতিবছর আমরা নিজেরা মিলে স্কুলে শহীদ মিনার বানিয়ে তাতে ফুল দেই। আমাদের স্কুলে একটা শহীদ মিনার দরকার।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রমা রানী বল বলেন, বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় আমরা বিব্রত। মাতৃভাষা দিবসে শিক্ষার্থীরা বিকল্প শহীদ মিনার নির্মাণ করে সেখানে শ্রদ্ধা জানায়। তিনি আরও বলেন, গতবছর স্কুলের উন্নয়ন অবকাঠামো খাতে ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ আসছিল । ওই সময় ওই বরাদ্দের কিছুটা দিয়ে স্কুলে একটা শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি করেছিলাম। কিন্তু কেউ তা আমলে নেননি।
এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রাথমিক ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা কিরণ চন্দ্র রায় বলেন, শহীদ মিনার নির্মাণে কোন বরাদ্দ নেই । কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে নিজেদের উদ্যোগে শহীদ মিনার থাকলে তা খর্বকায় ও জীর্ণদশা। প্রতিটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা উচিত। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।