করোনাভাইরাসসহ যেকোনো সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা দেবে ‘iWorkSafe’ অ্যাপ
নিউজ ডেস্ক : করোনাভাইরাসসহ যেকোনো সংক্রামক রোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে ‘আইওয়ার্কসেইফ’ নামে বিশেষ ধরনের অ্যাপ (কনট্যাক্ট ট্রেসিং অ্যাপ) বানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের নটিংহাম ট্রেন্ট ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এই অ্যাপ্লিকেশনটিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং ও ব্লুটুথ কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
অ্যাপটি কলকারখানা, বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে যেমন জানাতে সক্ষম, তেমনিভাবে সংক্রামক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তিকে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের মাধ্যমে চিহ্নিত করতে পারবে। এ ছাড়া ব্যবহারকারীর স্বাস্থ্যের ডাটা ও স্মার্টফোনের বিভিন্ন সেন্সর থেকে ডাটা সংগ্রহ করে অ্যাপ ব্যবহারকারীকে সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকেও রক্ষা করতে সক্ষম বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

যুক্তরাজ্যের নটিংহাম ট্রেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মুফতি মাহমুদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মো. শামীম কায়সার ও ড. শামীম আল মামুন যৌথ উদ্যোগে এসংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রকল্প পরিচালিত হয়।
গবেষকরা জানিয়েছেন, অ্যাপ্লিকেশনটি ব্লুটুথ ব্যবহার করে রিয়েলটাইম কন্টাক্ট সেভ করে দুজন ব্যবহারকারীর মধ্যে দূরত্ব পরিমাপ করতে পারে। ব্যবহারকারী অ্যাপটিতে বাস্তবায়িত মানচিত্রের সাহায্যে লকডাউন অঞ্চল এবং আইসোলেশনে থাকা রোগীদের গতিবিধি ট্র্যাক করতে পারবে। ব্যবহারকারীর শারীরিক অবস্থা, উপসর্গ এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন মেশিনের মাধ্যমে ওই ব্যক্তির সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি অনুমান করতেও সক্ষম।
ড. মুফতি মাহমুদ বলেন, ‘আইওয়ার্কসেইফ মোবাইল অ্যাপটি বর্তমান চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সময়ে খুবই যুগোপযোগী ও প্রয়োজনীয় একটি উদ্ভাবন। এটি কলকারখান ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য তৈরি করা হয়েছে, যাতে আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করেছি। এই অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে করোনাভাইরাসসহ জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টিকারী যেকোনো ভাইরাস সংক্রমণের স্ক্রিনিং করা যাবে। শুধু বাংলাদেশ নয়, যেকোনো দেশে যেসব কলকারখান এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করার মতো করে তৈরি করা হয়নি, এই অ্যাপের মাধ্যমে সেখানে কর্মরত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাবে। আইওয়ার্কসেইফ ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে যেতে পারব।’
ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির অধ্যাপক ড. মো. শামীম কায়সার ও সহযোগী অধ্যাপক ড. শামীম আল মামুন বলেন, ‘এই মোবাইল অ্যাপটি কভিড-১৯সহ ভবিষ্যতের যেকোনো মহামারি হতে বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলোর শিক্ষা ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো চালু রাখার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সুরক্ষা প্রদান করে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে পারবে। আইওয়ার্কসেইফ অ্যাপটি তথ্য বিশ্লেষণ করে নতুন কোনো সংক্রামক রোগ মহামারি আকার ধারণের আগেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে সরকার, গবেষক এবং চিকিৎসককে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জানিয়ে দিতে সক্ষম।’